কৃণ্বন্তো বিশ্বমার্যম

মানবতা আর দানবতার সহাবস্থান মানেই মানবতার বিনাশ। যদি বুঝিয়ে সুঝিয়ে দানবের মনে শুভবুদ্ধির জাগরণ ঘটানো সম্ভব হত, তাহলে মা দুর্গা মহিষাসুরের মাথায় বাবা বাছা বলে মাতৃস্নেহে হাত বুলিয়ে দিতেন, তাকে বধ করতেন না; শ্রীরামচন্দ্র লঙ্কায় গিয়ে রাক্ষসদের সামনে নৈতিকতার প্রবচন দিতেন, রাবণকে গুষ্ঠিশুদ্ধু নিকেশ করতেন না; শ্রীকৃষ্ণ মামা কংসকে, শিশুপালকে হত্যা না করে বাঁশীর মধুর সুরের মূর্ছনায় মোহিত করে তাদের ভাল মানুষ বানিয়ে ফেলতেন।

স্বয়ং ভগবানও অসুরদের তোয়াজ করে মানুষ বানাতে পারেন নি, তো আমরা কোন ক্ষেতের মূলো! তাই এই সত্যকে স্বীকার করতে হবে যে, মানবতাকে রক্ষা করার একটাই পথ আছে। আর সেটা হল দানবতার বিনাশ। সেইজন্যই ঋগ্বেদ বলেছে –
কৃণ্বন্তো বিশ্বমার্যম।
অপঘ্নন্তো অরাবণঃ।।
সারা বিশ্বে মানবতার বিস্তার ঘটাও, অর্থাত বিশ্বব্যাপী সনাতনী সংস্কৃতির প্রতিষ্ঠা করো এবং সাথে সাথে অসুরদের বিনাশ করো। এই বৈদিক মন্ত্র হিন্দুদের জন্য স্পষ্ট লাইন অফ অ্যাকশন নয় কি?

স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, “কোন লোক হিন্দুধর্ম ত্যাগ করে অন্য ধর্ম গ্রহণ করলে সমাজে শুধু যে একটি লোক কম পড়ে তা নয়। একটি শত্রু বৃদ্ধি হয়।” এর অর্থ এই যে, যারা ধর্মান্তরিত হচ্ছে, তারা এমন এক দর্শনে বিশ্বাস করতে শুরু করছে, যে দর্শন আমাদের হিদেন অথবা কাফের, অর্থাত শত্রু হিসেবে বিবেচিত করতে শিক্ষা দেয়। শুধুমাত্র তা ই নয়, আমাদের মত যারা তাদের মতাদর্শে অবিশ্বাসী, তাদের বিরুদ্ধে অনন্তকাল যুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের তথাকথিত পবিত্র গ্রন্থগুলোতে।

এখন প্রশ্ন হল, যারা আমাদের শত্রু বলে চিহ্নিত করে আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে রেখেছে, আমাদেরও কি তাদের শত্রু বলে বিবেচিত করাই উচিত নয়? আমরা কি হায়নার সাথে কোলাকুলি করে নিজেদের নিরাপদ রাখতে পারবো? আমরা কি বিষধর সাপের সাথে এক ঘরে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে চাইবো? এইসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর যদি আমাদের জানা থাকত তাহলে পাকিস্তানের সৃষ্টি হত না, গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং হত না, নোয়াখালি হত না, চুকনগর হত না, দেগঙ্গা, নলিয়াখালি, কালিয়াচক, ধূলাগড়, বসিরহাট ইত্যদির কোনটাই হত না।

এইজন্যই নিজের বাড়ির দেওয়ালে স্টিকার দুটো লাগিয়ে দিলাম। একটা স্টিকার শত্রু কে, সেটা চেনাবে। আরেকটা স্টিকারে আছে লাইন অফ অ্যাকশন। আপনারাও নিজের নিজের বাড়িতে এই স্টিকার দুটো এমন জায়গায় লাগান, যাতে বারবার ধ্রুবতারার মত আপনার বাড়ির সকলের পথনির্দেশ করতে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *