Physical Address
304 North Cardinal St.
Dorchester Center, MA 02124
Physical Address
304 North Cardinal St.
Dorchester Center, MA 02124
কোয়েনরাড এল্স্ট তাঁর ‘The Demographic Siege’ বইয়ের শুরুতেই লিখেছেন, “জনসংখ্যা একটি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীকে সংখ্যাগতভাবে প্রভাবশালী করে একটি দেশের সাংস্কৃতিক অভিমুখ পরিবর্তন করে দিতে পারে।…. খ্রীস্টানদের রোম সাম্রাজ্য দখলের পিছনে এই জনসংখ্যাগত পরিবর্তন একটা অন্যতম প্রধান কারণ ছিল। প্রথম তিন শতাব্দীতে ধর্মান্তরকরণ এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ প্রত্যাখ্যানের ফলে সেখানে খ্রীস্টানদের সংখ্যা বছরে ৪০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল।…. লেবাননে জনসংখ্যার ভারসাম্য মুসলমানদের দিকে ঝুঁকে পড়ায় খ্রীস্টানদের সাথে মুসলমানদের রাজনৈতিক ক্ষমতার পুনর্বন্টনের দাবীর সূত্রপাত হয়, যা ছিল লেবাননের সহিংস গৃহযুদ্ধের অন্যতম কারণ”।
আমাদের দেশেও জনসংখ্যার ভারসাম্য হেরফের হওয়াই দেশভাগের প্রধান কারণ ছিল। এদেশে দীর্ঘদিন মুসলিম শাসনের ফলে রাজনৈতিক আগ্রাসনের সাথে সাথে গোটা মুসলিম সমাজের ধর্মীয় আগ্রাসনের নীতির ফলে জনসংখ্যার ভারসাম্য মুসলমানদের দিকে ঝুঁকে পড়ে। ছলে, বলে, কৌশলে ব্যাপক ধর্মান্তরকরণ, হিন্দু সমাজের আভ্যন্তরীণ দুর্বলতা এবং হিন্দুদের বাস্তবজ্ঞান রহিত রক্ষণশীল নীতির কারণে ভারতের জনবিন্যাস দ্রুতহারে বদলাতে থাকে। একদিকে হিন্দু সমাজের আভ্যন্তরীণ ভেদাভেদ, অপরদিকে একদা ধর্মান্তরিতদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার নীতির কারণে হিন্দু সমাজ ক্ষয়িষ্ণু এবং দুর্বল হয়ে পড়ে। স্বামী শ্রদ্ধানন্দ তাঁর ‘Hindu Sangathan, Savior of The Dying Race’ বইয়ে লেখেন, “While Muhammadans multiply like anything, the number of the Hindus are dwindling periodically”। ১৯০৯ সালে কর্ণেল ইউ এন মুখার্জী তাঁর গবেষণা মূলক প্রবন্ধ ‘Hindus, A Dying Race’ এ লেখেন আগামা ৪২০ বছরের মধ্যে ভারতের বুকে থেকে হিন্দুরা অবলুপ্ত হয়ে যাবে। এর আগে ১৮৯১ সালে তৎকালীন সেনসাস কমিশনার ও-ডোনেল সাহেব ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন- আগামী ৬২০ বছরে হিন্দুরা অবলুপ্ত হবে।
ভারতে জনবিন্যাসের ধারাবাহিক পরিবর্তনের চিত্র আপনাদের সামনে তুলে ধরার জন্য নিচের টেবিলে কিছু তথ্য পেশ করলাম-
বৃটিশ ভারতে
সাল | ১৮৮১ | ১৮৯১ | ১৯০১ | ১৯১১ | ১৯২১ | ১৯৩১ | ১৯৪১ |
হিন্দু | 75.09% | 74.24% | 72.87% | 71.68% | 70.73% | 70.67% | 69.46% |
মুসলমান | 19.97% | 20.41% | 21.88% | 22.39% | 23.23% | 23.49% | 24.28% |
স্বাধীন ভারতে
সাল | ১৯৫১ | ১৯৬১ | ১৯৭১ | ১৯৮১ | ১৯৯১ | ২০০১ | ২০১১ |
হিন্দু | 84.1% | 83.51% | 82.72% | 82.29% | 81.29% | 80.5% | 79.8% |
মুসলমান | 9.91% | 10.70% | 11.21% | 11.73% | 11.73% | 13.4% | 14.2% |
এখানে উল্লেখ করা দরকার যে ১৯৮১ সালে আসাম এবং ১৯৯১ সালে জম্মু কাশ্মীর রাজ্যে জনগণনা না হওয়ার কারণে উপরের টেবিলে এই দুই রাজ্যের জনচরিত্রের প্রতিফলন হয় নি। সরকারী ডেটা এবং এক্সট্রাপোলেশনের মাধ্যমে ১৯৯১ সালে ভারতে হিন্দু-মসলিম সংখ্যার যে তথ্য লেখক আভাস বোস ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে ৯-৯-১৯৯৫ এ প্রকাশিত তাঁর ‘1991 Census data: Muslim rate of growth’ প্রবন্ধে তুলে ধরেছেন, তার ভিত্তিতে বলা যায় যে সেই দশকে ভারতে হিন্দু ছিল ৮১.৫৪ শতাংশ এবং মুসলমান ছিল ১২.৬ শতাংশ। এছাড়াও একটা বড় সংখ্যক অবৈধ অনুপ্রবেশকারী মুসলমানের স্রোত ভারতে আছড়ে পড়েছে ধারাবাহিকভাবে, যাদের তথ্য উপরের টেবিলে নেই। আভাস বোস তাঁর উপরোক্ত প্রবন্ধে লিখেছেন, “the proportion of Muslims has been gradually but steadily increasing every decade by roughly one percentage point”।
আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থতিটাও তুলে ধরার চেষ্টা করবো। কিন্তু তার আগে পশ্চিমবঙ্গের সৃষ্টির পটভূমি আমাদের সবার জানা দরকার। বৃটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলায় তখন মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, হিন্দু ৪৭ শতাংশ, মুসলমান ৫৩ শতাংশ। জিন্না দাবী করলেন গোটা বাংলাই পাকিস্তানকে দিতে হবে। গান্ধি-নেহেরুর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস ভারত ভাগ মেনে নিয়েছে। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী ভারত ভাগের বিপক্ষে ছিলেন। কিন্তু যখন তিনি বুঝলেন দেশভাগ এড়ানো যাবে না, তিনি বললেন ভারত ভাগ হলে বাংলাকেও ভাগ করতে হবে- হিন্দুদের জন্য চাই পশ্চিমবঙ্গ। এই প্রস্তাব শুনে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন জিন্না। তিনি জানতেন, বাংলা ভাগ হলে হিন্দু প্রধান কলকাতা, তৎসংলগ্ন গঙ্গার তীরবর্তী শিল্পাঞ্চল এবং রাঢ়বঙ্গের কয়লা খনি অঞ্চল পাকিস্তানে যাবে না। তিনি আক্ষেপ করে বললেন- পোকায় কাটা পাকিস্তান নিয়ে আমি কী করবো! জিন্না বাংলা ভাগ আটকে দেওয়ার জন্য বাঙালী তাশ খেললেন। মাউন্টব্যাটেনকে তিনি বললেন- একজন মানুষ আগে বাঙালী তারপরে হিন্দু বা মুসলমান। ভাগ করে তাদের আলাদা করবেন না। পাশাপাশি বাংলার হিন্দু নেতাদের টোপ দিলেন ‘অবিভক্ত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলা’ নামে একটি স্বাধীন দেশ গঠনের। টোপ গিলে ফেললেন সুভাষ চন্দ্র বোসের বড় ভাই শরৎ বসু, কিরণ শঙ্কর রায় প্রমুখ হিন্দু নেতারা। সাথে যোগ দিলেন বর্ধমানের লীগ নেতা আবুল হাশেম। শরৎ বসু এবং আবুল হাশেম, দুজনে মিলে স্বাধীন যুক্তবঙ্গের খসরা সংবিধান পর্যন্ত বানিয়ে ফেললেন। এই খসরা অনুযায়ী স্বাধীন বাংলার প্রধানমন্ত্রী হবে একজন মুসলমান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হবে একজন হিন্দু। কলকাতার কসাই সোহরাবর্দি বললেন এই দেশ হবে একটি ‘সোনার বাংলা’! সেই দেশ যে কী রকমের সোনার বাংলা হতে চলেছিল এবং সেদেশে হিন্দুদের কী দশা হত তা বাংলাদেশের দিকে তাকালেই যে কেউ বুঝতে পারবে!
এদিকে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী সহ বাংলার প্রমুখ হিন্দু নেতা এবং বিশিষ্টজনের অনেকেই উপলব্ধি করতে পারছিলেন এই সোনার বাংলার পিছনে লীগের কী অভিসন্ধি রয়েছে। একবার ভারত থেকে আলাদা স্বাধীন বাংলা তৈরি হয়ে গেলে সেই দেশ হত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ। তারপরে সেই মুসলিম বহুল দেশকে দখল করে নেওয়া ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা, যে চেষ্টা পাকিস্তান কাশ্মীরের ক্ষেত্রে করেছিল। ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদার, ডঃ মেঘনাদ সাহা, এন সি চ্যাটার্জী, সুনীতি চ্যাটার্জী, স্যার যদুনাথ সরকার, পণ্ডিত রাম শঙ্কর ত্রিপাঠী প্রমুখ বিশিষ্টজনেরা শ্যামাপ্রসাদের বাংলা ভাগের প্রস্তাবের সমর্থনে এগিয়ে আসেন। শ্যামাপ্রসাদের প্রস্তাবে সমর্থন দেয় বাংলার হিন্দু জনতা। ২৩-০৩-১৯৪৭ তারিখে অমৃতবাজার পত্রিকা জানায়, বাঙালী হিন্দুদের ৯৩.৩০ শতাংশ বাংলা ভাগের পক্ষে এবং মাত্র ০.৬০ শতাংশ এর বিপক্ষে। ৪ঠা এপ্রিল তারকেশ্বরে শ্যামাপ্রসাদের নেতৃত্বে হিন্দু মহাসভার Bengal Partition Convention শুরু হল। ২৫ হাজারেরও বেশী প্রতিনিধির উপস্থিতিতে তিন দিন ব্যাপী এই সভায় শ্যামাপ্রসাদ বললেন- বাংলা ভাগ করে পশ্চিমবঙ্গ তৈরি করতে না পারলে বাঙালী হিন্দুদের বেঁচে থাকার আর কোনো উপায় নেই। এটা বাঙালীর জীবন মরণের প্রশ্ন। ৭ই মে যদুনাথ সরকার, সুনীতি চ্যাটার্জী, মেঘনাদ সাহা প্রভৃতি বুদ্ধিজীবীরা বাঙালী হিন্দুদের নিরাপত্তার জন্য একটি আলাদা প্রদেশের দাবী তোলেন। শনিবারের চিঠি লেখে- “ভাগ হইয়া যাওয়াই ভাল”। কলকাতা কর্পোরেশনের ৩৭ জন কাউন্সিলর বাঙালী হিন্দু এবং জাতীয়তাবাদীদের জন্য আলাদা বাসভূমির দাবী করেন। অবশেষে ১৯৪৭ সালের ২০শে জুন বেঙ্গল লেজিস্লেটিভ কাউন্সিলে তিন পর্যায়ে ভোট গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত হয়। প্রথমে সম্পূর্ণ সভার (২৫০ জন সদস্য), তারপর মুসলিম অধ্যুষিত পূর্ববঙ্গের প্রতিনিধিদের এবং সবশেষে হিন্দু প্রধান পশ্চিম অংশের প্রতিনিধিদের। তৃতীয় পর্যায়ের ভোটে ৫৮-২১ ভোটের ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে আনেন পশ্চিম অংশের হিন্দুরা। পশ্চিমবঙ্গ গঠনের পক্ষে যে ৫৮ জন ভোট দিয়েছিলেন তাঁরা সকলেই হিন্দু। অন্যদিকে বর্ধমান কেন্দ্র থেকে জিতে আসা আবুল হাশেম, কলকাতার তিলজলা আসন থেকে জিতে আসা হুসেনারা বেগম, ২৪ পরগনা আসন থেকে জিতে আসা বাটানগরের ইদ্রিশ আলী মোল্লা, হাওড়া কেন্দ্র থেকে জিতে আসা জগদবল্লভপুরের মহম্মদ ইদ্রিশ, ব্যারাকপুর থেকে জিতে আসা কাঁকিনাড়ার দীন মহম্মদ কামমরুদ্দিন, রামচন্দ্রপুর, শিরাকোল, ২৪ পরগণা থেকে জিতে আসা জসীমউদ্দীন আহমেদ, বাঁকুড়া থেকে জিতে আসা সৈয়দ মোহাম্মদ সিদ্দিক, রামপুরহাট, বীরভূম থেকে জিতে আসা মুদাসীর হুসেন, মেদিনীপুর থেকে জিতে আসা সিরাজুদ্দীন আহমেদ- এদের মত ২১ জন মুসলমান পশ্চিমবঙ্গ গঠনের বিপক্ষে ভোট দেয়। পরে এক সময় নেহেরু শ্যামাপ্রসাদকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, তাঁর এবং তার দলের দেশভাগে সম্মতি ছিল। উত্তরে শ্যামাপ্রসাদ বলেছিলেন- আপনি ভারত ভাগ করেছেন, আমি পাকিস্তান ভাগ করেছি। এই ইতিহাস বলে দেয় যে পশ্চিমবঙ্গ তৈরি হয়েছিল বাঙালী হিন্দুদের নিরাপদে এবং সম্মানের সাথে বেঁচে থাকার আশ্রয় হিসেবে।
বর্তমান পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুরা কী অবস্থায় আছে তা এখানে বলার প্রয়োজন নেই, কারণ যার চোখ আছে সে দেখতে পাচ্ছে। তার চেয়ে বেশী প্রয়োজন বাঙালী হিন্দুদের এখানে ভবিষ্যত কি, সেটা আলোচনা করা। দেশভাগের পরে ১৯৫১ সালে প্রথম জনগণনার রিপোর্ট অনুসারে পশ্চিমবঙ্গে জনসংখ্যার বিন্যাস ছিল এই রকম- হিন্দু ৭৮.৪৫ শতাংশ এবং মুসলমান ১৯.৮৫ শতাংশ। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে এই সংখ্যা দাঁড়ালো হিন্দু ৭১ শতাংশ এবং মুসলমান ২৭ শতাংশ। অর্থাৎ, এই কয়েক দশকে পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুর সংখ্যা কমেছে প্রায় সাড়ে সাত শতাংশ, পক্ষান্তরে মুসলিম জনসংখ্যা বেড়েছে সাত শতাংশেরও বেশী। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে রাজ্যে জমি, ব্যবসা, চাকরি, কৃষি, দিনমজুরী ইত্যাদি সমস্ত ক্ষেত্রে, সর্বোপরি রাজনৈতিক ক্ষমতার ক্ষেত্রে হিন্দুদের অংশীদরিত্ব কমতে থেকেছে এবং হিন্দুর ভাগের সেই অংশ মুসলমানেরা দখল করেছে। সোজা কথায় যে পশ্চিমবঙ্গের জন্ম হয়েছিল বাঙালী হিন্দুর শেষ আশ্রয় হিসেবে, সেখানে বাঙালী হিন্দুরা ক্রমশ পায়ের তলার মাটি হারাচ্ছে। মনে রাখতে হবে যে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় বর্তমানে ৪৪ জন মুসলিম বিধায়ক আছেন এবং মোট ২৯৪ টি আসনের মধ্যে প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ টি আসনে মুসলমানদের নিয়ন্ত্রণ প্রবল। এর প্রধান কারণ সেই সমস্ত আসনের জনবিন্যাস। এই ট্রেন্ড চলতে থাকলে ২০২৬ এর বিধানসভার নির্বাচন বাঙালী হিন্দুদের জন্য শেষ সুযোগ। মুসলিম শাসন ফিরে এলে কী হতে চলেছে, তা নিশ্চই ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই। শুধু নিচে একটু পুরোনো ইতিহাসের স্মরণ করবো।
বৃটিশ ভারতের অবিভক্ত বঙ্গে ১৯৩৭ সালে শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় মুসলিম লীগ। এরা ক্ষমতায় বসার সাথে সাথে সরকারী-বেসরকারী চাকরি থেকে হিন্দুদের সরিয়ে মুসলমানদের বসাতে থাকে। পাশাপাশি মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় দাঙ্গা লাগিয়ে হিন্দুদের ভীত সন্ত্রস্ত করে হিন্দু বিতাড়ন এবং ধর্মান্তরকরণের কাজে সরাসরি মদত দিতে থাকে। লীগ সরকারের নির্লজ্জ পক্ষপাতিত্বের কারণে হিন্দুদের মনের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার ভয় বদ্ধমূল হয়ে ওঠে। এই সরকারের পক্ষপাতিত্বের আচরণ সম্পর্কে সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর ‘পূর্ব-পশ্চিম’ উপন্যাসে বর্ণনা করেছেন- কলকাতার একটি সরকারী কলেজে লেকচারার পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে একজন ফার্স্ট ক্লাসে পাশ করা হিন্দু প্রার্থীকে বঞ্চিত করে সেই পদে একজন থার্ড ক্লাসে পাশ করা মুসলমানকে নিয়োগ করা হয়। এর প্রতিবাদ করলে শিক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ঘোষণা করেন যে ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই পদে মুসলমানকেই নিতে হবে। ফার্স্ট বা সেকেন্ড ক্লাস পাওয়া গেলে ভাল, না পেলে থার্ড ক্লাসই নিতে হবে। আপনারা নিশ্চই ভাবছেন ধান ভানতে শিবের গীত কেন গাইছি! না, এটা ২০২৬ এর পরে আমার আপনার কি হতে চলেছে, সেটাই আপনাদের দেখাতে চাইছি। এটা মুসলমানদের সর্বকালীন নীতি। কাফেরদের প্রতি বঞ্চনা, নিপীড়ন, বিতাড়ণ, অবিচার সবই ইসলাম সম্মত, আপন করে নেওয়ার নীতি শুধুমাত্র কাফেরদের বাড়ির মহিলাদের জন্য- সেটাও ছলে, বলে, কৌশলে, যেভাবে সম্ভব!
পরিশেষে বলি, পশ্চিমবঙ্গে আধা লীগ-শাসন আমরা গত ১৩ বছর ধরে ভোগ করছি। রাম নবমীর শোভাযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা, দুর্গাপূজায় বিভিন্ন ধরণের নিষেধাজ্ঞা; বাংলাদেশে যা ঘটে চলেছে, ঠিক সেই আদলে পূজা মন্ডপে ঢুকে হুমকি ধমকি দেওয়া; ওবিসি-দের জন্য সংবিধান প্রদত্ত সংরক্ষণের সিংহভাগ ওবিসি-এ ক্যাটাগরির মাধ্যমে ঘুরিয়ে মুসলমানদের হাতে তুলে দেওয়া, হিন্দুদের সম্পর্কে অপমান জনক মন্তব্য (যারা মুসলমান হয়ে জন্মায়নি তারা দুর্ভাগা) করার পরেও, হিন্দুদের কেটে জলঙ্গীতে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়ার পরেও মুসলিম বিধায়কদের বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ না নেওয়া; জনসমক্ষে রাস্তায় ফেলে এক মহিলাকে লাঠি দিয়ে পেটানোর পরেও অপরাধীর শাস্তি নেই, বরং শরিয়ত অনুযায়ী এই কাজকে সঠিক বলে জাস্টিফাই করা- এই সব অসংখ্য উদাহরণ দেওয়া যায়, যাতে খোলা চোখে দেখা যাচ্ছে যে পশ্চিমবঙ্গ ক্রমশ পশ্চিম বাংলাদেশে পরিণত হচ্ছে আর এখানে হিন্দুরা ক্রমশ দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত হচ্ছে। এই পরিস্থিতির পরিবর্তন করার জন্য আদৌ কোনো উদ্যোগ নেওয়ার প্রয়োজন আছে কি না, প্রয়োজন থাকলে সেটা কিভাবে সম্ভব হবে, এই সমস্ত চিন্তা করার দায়িত্ব রাজ্যের সকল বাঙালী হিন্দুদের, এই দায় শুধুমাত্র আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ কিংবা বিজেপির নয়। বাঙালী হিন্দুরা এখনও সেকুলারিজমের গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে চললে পশ্চিমবঙ্গ থেকে পশ্চিম বাংলাদেশের এই যাত্রাপথ কেউ আটকাতে পারবে না।
প্রত্যেক সচেতন হিন্দু ব্যক্তি কে নিজেদের এরিয়া অনুযায়ী সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই হবে।
সুরক্ষা নিয়ে চিন্তা ভাবনা তখনই সম্ভব যখন নিজেকে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবে!
– হঠাৎ জিহাদিরা ৪০০-৫০০ সংখ্যা নিয়ে বাড়ি তে হামলা চালাবার জন্য চলে এলে কি করবে ??
ইতিহাস সাক্ষী আছে, আমারা শান্তিপ্রিয় মানুষ, কিন্তু জিহাদিরা আমাদিকে কাফির (শয়তান) মনে করে। মানে আপনি যুদ্ধ না চাইলেও জিহাদিরা আপনাকে হত্যা করবেই..
Talmud বয় লেখা আছে –
if someone wants to kill you, rise up and kill him first.
*Talmud*
সোজা হিসাব আছে, বেশি চিন্তা ভাবনা করলেই সমস্যা,
আপনাকে কেও মারবে তার আগেই আপনি তাকে মেরে ফেলে দিন….
সহমত।
আরো হিন্দু জাগরণের কাজ দরকার।
গ্রামে গ্রামে সঙ্ঘ শক্তির কাজ বাড়াতে হবে।
একদম সঠিক কথা l
Ekdam thik katha
ভাই একটা কথা বলি,জিহাদীদের ব্যাপারে কেনো মন্দ ধারণা করছেন আপনারা? বাস্তবিক অর্থে জিহাদী কারা জানেন? জিহাদী হলো তারা,যারা পৃথিবীতে ন্যায়নীতি-সঠিক বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এই বিচার ব্যাবস্থার মূলে রয়েছে পবিত্র আসমানি গ্রন্থ কুরআন। আর এই কুরআন শুধুমাত্র মুসলমান বান্ধব করে পাঠান নি সৃষ্টিকর্তা বরং সব মানুষের জন্য কল্যান সরূপ এই বইটা পাঠানো হয়েছে। কুরআন সম্বন্ধে বিস্তর ধারণা রাখা ব্যাক্তি মাত্রই এই বিষয়টি অনুধাবন করতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি মানব অবয়বে প্রথম সৃষ্টির নাম আদম (উনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক)। পৃথিবীতে বসবাসকারী প্রত্যেকটা মানুষই তার সন্তান।সেই হিসেবে মৌলিকভাবে সবাই ভাই ভাই। আল্লাহর রাসূল (সা.) মদিনায় ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠার পর ইয়াহুদিদের বিতাড়িত করেননি কোনো প্রকার অসৌজন্যমূলক আচরণ করেননি বরং তারাই কয়েকবার ওনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। খ্রিষ্টান পাদ্রীরা মদিনা পরিদর্শন করতে আসলে তিনি তাদেরকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়ে সর্বোত্তম স্থান মসজিদে নববীতে বসিয়ে আপ্যায়ন করেছেন। এক কথায়,একজন ভিন্ন আদর্শ ধারণকারি মানুষকে তার প্রাপ্য সম্মান কিভাবে দিতে হয় তা তিনি হাতে কলমে তার অনুসারীদের শিখিয়েছেন। তারই অনুসারিরা পরবর্তীতে আমাদের উপমহাদেশে এসেছিলেন সাথে করে নিয়ে এসেছিলেন এক আদর্শবান সমাজব্যবস্থা যার প্রভাবে যুগের পর যুগ মানুষ তাদের জীবন ধারায় ইসলামকে আঁকড়ে ধরেছে। মানুষ মাত্রই চিন্তা ভাবনা করবে অতঃপর একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে।একটি জাতির সবাই যে অন্ধের মতো আচরণ করবে তা তো হয়না,যারা চিন্তাশীল-মস্তিষ্কের ব্যাবহার করে তারাই একটি সিদ্ধান্তে গিয়ে স্থির হয়েছে।
যদি আপনি জিন্নাহ আর তৎকালীন মুসলমান নামধারী শাসকদেরকে দিয়ে ইসলামি শাসন আর জিহাদি বলে চালিয়ে দেন তাহলে আপনার গবেষণায় সত্যের অভাব রয়েছে। সত্যনিষ্ঠ তথ্য সরবরাহ করার জন্য আপনাকে অনুরোধ জানাচ্ছি। পরিশেষে সৃষ্টিকর্তার কাছে আমার এই প্রার্থনা দুই বাংলার মানুষই যেনো সুখ-শান্তি এবং সম্মান ও নিরাপত্তার সাথে জীবনযাপন করতে পারে।
আপনার কথা চিরন্তন সত্য বচন হতে চলেছে দাদা। তার টের আমিও পেয়েছি, এক সপ্তাহ আগে কীর্নাহার থানার নতুন ওসি একজন মুসলিম সে আমাকে হিন্দুত্ব বাদী পোস্ট লাগাতার করার জন্য শাসক দলের মুসলিম নেতাদের কথাই দুপুরের খাবার সময় বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে অমানুষিক অত্যাচার করে তার জন্য ডাক্তার দেখিয়ে বাড়িতেই বসে আছি। ঐ ওসির মুখের ভাষাতেই বুঝতে পেরেছি আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই না করলে আগামী দশ বছরের মধ্যেই আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জীবন অন্ধকারে ঢেকে যাবে। প্রণাম নেবেন।
অসাধারণ লেখা । বাঙালি হিন্দু দের স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময় থেকে আজ পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় নব্বই বছর ধরে নিজেদের ধর্মীয় ভাবাবেগ থেকে সুকৌশলে রাজনৈতিক কুশীলবেরা সক্রিয় প্রচেষ্টায় বিপথে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে । বাঙালি হিন্দু দুর্গা উৎসবে মেতে আছে দুর্গা পূজা ছেড়ে । মায়ের আবাহনের থেকে বিসর্জনের আড়ম্বর বেশি । ভাবা যায় । বাঙালি হিন্দু দের অত্যাচারিত হবার মূল কারন তারা আজ দুর্বল হীনবল । দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচারে শুধু অত্যাচারী কে দোষারোপ না করে আমাদের দুর্বলতার কারন ও উপচার বের করা বেশি জরুরী । আসল রোগ বাঙালি হিন্দু দের মায়ের হাতের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে ফুল গুঁজে দেবার এক বিকৃত প্রবণতা আর নিজেদের বিচ্ছিন্ন মনস্কতা । যা দীর্ঘ ঋণাত্মক রাজনৈতিক শাসনের ফল। একবার সুগঠিত একত্রিত আব সংগঠিত হয়ে গেলে মহাদেবের রুদ্র প্রলয় শুরু হবে । অত্যাচারীর মনে ভয়ের সঞ্চার করতে পারলে তবেই অত্যাচার বন্ধ হবে। নিজেদের সঠিক জীবনযাপন আর ধর্মাচরণের জন্য নিজভূমে সংখ্যাগরিষ্ঠ দের যদি অপরের মুখাপেক্ষী হয়ে বা দয়ার ওপর থাকতে হয় তার দায় ও দায়িত্ব সেই জাতির ওপরেই বর্তায় । সনাতন হিন্দু ধর্ম শত সহস্র বর্ষ প্রাচীন আদি অকৃত্রিম সর্ব হিতকর এবং সর্ব গুনসমৃদ্ধ। বিপরীত রাজনৈতিক প্রশ্রয় ও দুষ্কৃতী প্রবণতা মুক্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি নির্মাণের অঙ্গীকার সংখ্যাগরিষ্ঠ অত্যাচারিত দেরই করতে হবে নিজভূমে পরবাসী না হতে হলে।
Alarming fact
পশ্চিমবঙ্গের একজন চিন্তনশীল সনাতনী হিন্দু হিসাবে উপরের উল্লেখিত প্রতিবেদনের মূল চিন্তনের সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত।
সময়ের থেকে অনেক এগিয়ে থেকে, ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি, বাঙালি হিন্দুদের ভবিষ্যত সর্বনাশের যে সিঁদুরে মেঘ দেখতে পেয়েছিলেন তা আজ বাস্তবে দেখতে চলেছি আমরা এই বাংলার বুকে।
মুসলিম আগ্রাসন থেকে পশ্চিমবঙ্গের সুরক্ষার
জন্য আমি 24 ঘন্টার প্রহরী,,,