কমিউনিজম এবং ডঃ আম্বেদকর

হিন্দু সমাজের ঐক্য এবং এই ঐক্যের রাজনৈতিক প্রতিফলনই এখন হিন্দুর শত্রুদের সবথেকে বড় মাথাব্যথার কারণ। রাজনীতির ক্ষেত্রে যে একটা ধর্মীয় মেরুকরণ হয়েছে এই বাস্তবতাকে আজ কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। কংগ্রেস,বামপন্থী এবং স্বার্থান্বেষী কয়েকটি আঞ্চলিক দল মিলে যে ইন্ডি জোট তৈরি হয়েছে, এই ধর্মীয় মেরুকরণের ফলে এদের পিন্ডি চটকে গেছে। বিজেপিকে কেন্দ্র করে হিন্দু জাতীয়তাবাদী সমাজের কনসলিডেশনের ফলস্বরূপ এরা আজ দিশাহারা। এই অপ্রত্যাশিত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এদের ভারত বিরোধী এবং হিন্দু বিরোধী গোপন এজেন্ডা এখন খোলস ছেড়ে বেরোতে শুরু করেছে। এতদিন পর্যন্ত ধর্মনিরপেক্ষতার রঙিন চশমা পরিয়ে এবং হিন্দু সন্ত্রাসবাদের নামে একটা মিথ্যা আতংক তৈরি করে এরা ভারতের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে বিভ্রান্ত করে রেখেছিল। কিন্তু ইন্টারনেটের যুগে সত্যকে বেশিদিন লুকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। এদের ধর্মনিরপেক্ষতা যে আসলে হিন্দু-বিরোধিতা এবং মুসলিম তোষণের পোশাকি নাম সেটা আজ সবাই বুঝতে পেরেছে। পাশাপাশি হিন্দু সন্ত্রাসবাদের মিথ যে আসলে দেশের ভিতরের ও বাইরের ভারত বিরোধী এবং হিন্দু বিরোধী শক্তিগুলোর সেট করা ন্যারেটিভ- সেটা আজ জলের মত পরিষ্কার। যারা এদেশে দেশপ্রমিক জাতিয়তাবাদী শক্তির উত্থান চায় না, ভারতে প্রকৃত ভারতীয়দের শাসন চায় না, বরং নিজেদের হাতের পুতুল কিছু পেটোয়া দালালকে ক্ষমতায় বসিয়ে বাস্তবে ভারতকে পদানত করে রাখতে চায়, সেই সমস্ত ভারত বিরোধী শক্তিগুলোর অঙ্গুলি হেলনে এদেশে রাজনৈতিক ন্যারেটিভ তৈরি হচ্ছে এটা আজকে ওপেন সিক্রেট।

এরা নিশ্চিত যে ভারতকে দুর্বল করতে হলে, ভারতের অগ্রগতিকে প্রতিহত করতে হলে মোদীকে, বিজেপিকে শাসন ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া যাবে না। এটা তখনই সম্ভব হবে, যখন হিন্দু সমাজে গড়ে ওঠা এই ঐক্যকে ভাঙা যাবে। তাই এদের অন্যতম হাতিয়ার হল কাস্ট পলিটিক্স। আর কাস্ট পলিটিক্স করতে হলে আম্বেদকরের নাম এবং ছবি সামনে রাখতেই হবে। তাই আম্বেদকরকে সামনে রেখে, তথ্য গোপন করে অথবা তথ্য বিকৃত করে হিন্দু বিরোধী, বিজেপি বিরোধী ন্যারেটিভ নামানোর কাজ চলছে। এই কাজে প্রধানত বামপন্থীরাই সামনের সারিতে। অতিবাম নেতা আনন্দ তেলতুম্বডে ‘বি আর আম্বেদকর: ইন্ডিয়া এন্ড কমিউনিজম’ বইয়ের মুখবন্ধে অনেক যুক্তি খাড়া করার চেষ্টা করেছেন যে ড়ঃ আম্বেদকর মার্ক্সবাদের বিরোধী ছিলেন না। তপশিলি সমাজের মধ্যে এই তত্বকে প্রতিষ্ঠিত করে তাদেরকে হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন করার একটা মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। কিন্তু ডঃ আম্বেদকর মার্ক্সবাদের মৈলিক তত্ব এবং তার বাস্তবায়নের পথের সাথে সম্পূর্ণ ভিন্ন মত পোষণ করতেন এই সত্য সবার সামনে আসা দরকার। পাশাপাশি মার্ক্সবাদীরাও ডঃ আম্বেদকরকে শত্রু মনে করতেন এবং বারবার মার্ক্সবাদীদের সাথে তার মতবিরোধ হয়েছে। মার্ক্সবাদীরা কিভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর বিরোধিতা করেছে সেই সত্যও সামনে আসা দরকার।

মার্ক্সবাদ প্রসঙ্গে ডঃ আম্বেদকর বলেছেন,” বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র দ্বারা কার্ল মার্কস যা বোঝাতে চেয়েছিলেন তা হল তার সমাজতন্ত্রের ব্র্যান্ড অনিবার্য এবং অপরিহার্য। মনুষ্য সমাজ তার দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং কিছুই এর অগ্রগতিকে আটকাতে পারবে না (Buddha Or Karl Marx, page-11)।…. মার্ক্সবাদের তত্ব সামনে আসার পর থেকেই এর প্রচুর সমালোচনা হয়েছে। এর ফলস্বরূপ মার্ক্সের মূল তাত্বিক বিচারধারা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছে। এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে মার্ক্সবাদীদের সমাজতান্ত্রিক ব্র্যান্ডের অনিবার্যতার দাবী সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে (Buddha Or Karl Marx, page-13)।“

রাশিয়ায় কমিউনিজমের প্রতিষ্ঠার প্রসঙ্গে ডঃ আম্বেদকরের অভিমত, “দাস ক্যাপিটালের প্রথম প্রকাশনার ৭০ বছর পরে কোনও একটা দেশে কমিউনিজম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটা কোনও রকম মানবিক প্রচেষ্টা ছাড়াই স্বাভাবিক ভাবে ‘অনিবার্য’ রূপে আসে নি। সেখানে সুপরিকল্পিতভাবে একটা বিপ্লব সংঘটিত করা হয়েছিল এবং এতে প্রচুর হিংসা ও রক্তক্ষয়ও হয়েছিল।… সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অনিবার্যতার মিথ্যা তত্ব ছাড়াও মার্ক্সবাদের অনেক প্রস্তাবই যুক্তি এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার কষ্টিপাথরে নস্যাৎ হয়ে গিয়েছে।…(যেমন) ইতিহাসের অর্থনৈতিক পরিভাষাই যে ইতিহাসের একমাত্র ব্যাখ্যা- একথা কারও কাছেই গ্রহণযোগ্য নয়। কমিউনিজম প্রতিষ্ঠার ফলে সর্বহারা শ্রেণী ক্রমশ শেষ হয়ে গিয়েছে, একথাও গ্রহণযোগ্য নয়।(Buddha Or Karl Marx, page-14)”

ডঃ আম্বেদকর বুদ্ধের মতবাদ এবং মার্ক্সবাদের তুলনামূলক পর্যালোচনা করতে গিয়ে বলেছেন, “ এটা স্পষ্ট যে বুদ্ধ দ্বারা গৃহীত উপায়গুলি ছিল একজন মানুষকে তার নৈতিক স্বভাব পরিবর্তন করে স্বেচ্ছায় সেই পথে চলার জন্য রূপান্তরিত করা। পাশাপাশি মার্ক্সবাদীদের গৃহীত পথ হল হিংসা এবং সর্বহারার একনায়কতন্ত্র (Buddha Or Karl Marx, page-24)।“

হিংসা এবং ধ্বংসের মার্ক্সিয় পথের কঠোর সমালোচনা করে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “কমিউনিস্টরা কি বলতে পারে যে তাদের মূল্যবান সাফল্য অর্জনে তারা অন্য মূল্যবান উদ্দেশ্যগুলিকে ধ্বংস করেনি?  তারা ব্যক্তিগত সম্পত্তি ধ্বংস করেছে। এটাকে যদি একটা সাফল্য বলে মনে করা হয়, তারা কি বলতে পারে যে তারা এই সাফল্য অর্জনের প্রক্রিয়ায় অন্য মূল্যবান জিনিষকে ধ্বংস করেনি?  কত মানুষকে তারা হত্যা করেছে তাদের মতকে প্রতিষ্টা করার জন্য। তাদের কাছে মানুষের জীবনের কি কোনও মূল্য নেই? (Buddha Or Karl Marx, page-29)”

মার্ক্সবাদের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, “কমিউনিস্টরা স্বয়ং স্বীকার করে যে, স্থায়ী একনায়কত্ব হিসেবে রাষ্ট্রের তত্ত্ব তাদের রাজনৈতিক দর্শনের দুর্বলতা। তারা দাবি করে যে রাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত বিলীন হয়ে যাবে। এই প্রসঙ্গে দুটি প্রশ্ন আছে,  যার উত্তর তাদের দিতে হবে। কখন রাষ্ট্র বিলীন হয়ে যাবে?  রাষ্ট্র বিলীন হয়ে গেলে তার স্থানে বিকল্প ব্যবস্থা কী হবে? … এর ফলে কি নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে?…এই প্রশ্নগুলির কোনও সুস্পষ্ট উত্তর কমিউনিস্টদের কাছে নেই (Buddha Or Karl Marx, page-43)”।

তাঁর স্পষ্ট মত ছিল এই যে সমাজতন্ত্র একমাত্র প্রতিষ্ঠিত হতে পারে ধর্মের ভিত্তিতে, মার্ক্সের পথে নয়। কারণ, “মানবতা শুধু অর্থনৈতিক মূল্যবোধ চায় না। মানবতা আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ বজায় রাখতে চায়।…. কার্লাইল পলিটিক্যাল ইকোনমিকে ‘পিগ ফিলসফি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।… মানুষের জন্য বস্তুগত আরামের প্রয়োজন আছে কিন্তু মার্ক্সবাদ এই জন্যই ভুল বলে মনে হয় যে এই দর্শনের বস্তুতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গীতে মানুষ আর শূকরের মধ্যে বিশেষ পার্থক্য নেই। মানুষকে বস্তুতান্ত্রিক জীবনধারার পাশাপাশি আধ্যাত্মিকভাবেও বেড়ে উঠতে হবে (Buddha Or Karl Marx, page-48)।“

বাবাসাহেব বিশ্বাস করতেন যে মার্ক্সবাদের জন্মের বহু বহু আগেই ভারতে সমাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন বুদ্ধদেব এবং সেটাও কোনও হিংসা, রক্তক্ষয়, ধ্বংস অথবা একনায়কতন্ত্র ছাড়াই। তিনি ছিলেন আদ্যোপান্ত ধর্মবিশ্বাসী এবং ধর্মকে আফিম বলে মনে করা কমিউনিস্টদের তিনি ঘৃণা করতেন।

কমিউনিস্টদের ভন্ডামি সম্পর্কেও তিনি যথেষ্ট সতর্ক ছিলেন, “আম্বেদকর, যিনি শ্রমিকদের ধর্মঘটের অধিকারে বিশ্বাস করতেন, বলেছিলেন যে ধর্মঘটের অস্ত্রটি কমিউনিস্ট নেতাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের জন্য নয়, শ্রমিকদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করা উচিত। তার চরিত্রগত সাহসিকতার সাথে তিনি তার দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন যে কমিউনিস্টরা শ্রমিকদের উন্নতির লক্ষ্যের চেয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই ধর্মঘট করতে আগ্রহী ছিল(ধনঞ্জয় কির, ড. আম্বেদকর জীবন ও মিশন)।

কমিউনিস্টদের দ্বারা পরিচালিত শ্রমিক আন্দোলন সম্পর্কে তিনি বলেছেন, “তার কমিউনিস্টদের সাথে যোগদানের কোন সম্ভাবনা নেই। তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি কমিউনিস্টদের একজন নিশ্চিত শত্রু, যারা তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের জন্য শ্রমিকদের শোষণ করেছিল (ধনঞ্জয় কির, ড. আম্বেদকর জীবন ও মিশন)।“

কমিউনিস্টরাও আম্বেদকরের বিরোধিতায় সরাসরি মাঠে নেমেছিল। সিপিআই নেতা শ্রীপাদ ডাঙ্গের নেতৃত্বে কমিউনিস্টরা বোম্বে সেন্ট্রাল সিট থেকে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ডঃ আম্বেদকরকে হারিয়ে দিয়েছিল।

আজকে যারা সংবিধানের রক্ষক হিসেবে অবতীর্ণ, মোদী আম্বেদকরের সংবিধানকে ধ্বংস করে দেবে বলে চিৎকার করছে, সংবিধানের প্রতি তাদের সম্মান কতটা ছিল এবং তারা কি ধরণের সংবিধানের দাবী করেছিলেন তা দেখা যাক। ১৯৪৯ সালের ২৫শে নভেম্বর বাবাসাহেব আম্বেদকর ভারতের গণপরিষদে তাঁর শেষ ভাষণ প্রদান করেন। এই ভাষণে তিনি কমিউনিস্টদের সংবিধান বিরোধী এবং গণতন্ত্র বিরোধী ভুমিকাকে তুলে ধরেন, “সংবিধানের নিন্দা মূলত দুটি মহল থেকে আসে, কমিউনিস্ট পার্টি এবং সমাজতান্ত্রিক দল। কেন তারা সংবিধানের নিন্দা করে?  এটা কি আসলেই খারাপ সংবিধান?  আমার মতে তা নয়। কমিউনিস্ট পার্টি সর্বহারা শ্রেণীর একনায়কত্বের নীতির উপর ভিত্তি করে একটি সংবিধান চায়। তারা সংবিধানের নিন্দা করে কারণ এটি সংসদীয় গণতন্ত্রের উপর ভিত্তি করে। সমাজতন্ত্রীরা দুটি জিনিস চায়। তারা প্রথম জিনিসটি চায় যে তারা ক্ষমতায় এলে সংবিধানে তাদের ক্ষতিপূরণ না দিয়ে সকল ব্যক্তিগত সম্পত্তি জাতীয়করণ বা সামাজিকীকরণের স্বাধীনতা দিতে হবে। সমাজতন্ত্রীরা দ্বিতীয় যেটি চায় তা হল সংবিধানে উল্লিখিত মৌলিক অধিকারগুলি অবশ্যই নিরঙ্কুশ এবং কোনো সীমাবদ্ধতা ছাড়াই হতে হবে যাতে তাদের দল ক্ষমতায় আসতে ব্যর্থ হলে তাদের কেবল সমালোচনা করার নয়, বরং সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করারও নিরবচ্ছিন্ন স্বাধীনতা থাকে। তথ্যসূত্রঃ- Dr B R Ambedkar’s last speech in the Constituent Assembly on adoption of the constitution (25th Novembr 1949( ~ Indian Politics – Interesting insights (primepoint.in)।“

পরিশেষে বলি যে বাবাসাহেব হিন্দু সমাজের সামাজিক শৃঙ্খলা, তাঁর মতে যা প্রধানত বর্ণপ্রথার ভিত্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত, সেই বর্ণপ্রথার কঠোর সমালোচক হলেও তিনি হিন্দু সমাজের সংস্কারের মাধ্যমে এই কুপ্রথার অবসান ঘটানোর জন্যই আগ্রহী ছিলেন। ১৯৩৫ সালে তিনি ঘোষণা করেন যে তিনি হিন্দু হয়ে জন্মগ্রহণ করেছেন, কিন্তু হিন্দু হয়ে মৃত্যুবরণ করবেন না। এই ঘোষণার ফলে তৎকালীন ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক হিন্দু নেতাদের কাছ থেকে এবং সামগ্রিকভাবে হিন্দু সমাজের কাছ থেকে সদর্থক প্রতিক্রিয়ার জন্য ২১ বছর অপেক্ষা করেছিলেন। এই সময়ে তাঁর কাছে পোপের প্রতিনিধি এসেছিলেন, নিজামের প্রতিনিধি এসেছিলেন। কিন্তু তিনি তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে খ্রীস্টান অথবা মুসলমান ধর্ম গ্রহণ করেন নি। তিনি জানতেন যে তাঁর সাথে সাথে তাঁর লক্ষ লক্ষ সমর্থক যদি খ্রীস্টান অথবা মুসলমান হয়ে যায়, তাহলে তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর এই সমর্থকরা বিচ্ছন্নতাবাদী শক্তিগুলোর ষড়যন্ত্রের শিকার হবে এবং সময়ের সাথে সাথে ভারতবর্ষের ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে ধর্মের ভিত্তিতে বিচ্ছিন্নতাবাদ মাথা চাড়া দেবে। এই পরিস্থিতিতে ভারতবর্ষ অসংখ্য টুকরোতে বিভক্ত হয়ে যেতে পারে। এই প্রসঙ্গে গান্ধিজীকে তিনি বার্তা দিয়েছিলেন যে তাঁর সিদ্ধান্তের ফলে ভারতের অখণ্ডতার উপরে কোনও আঁচ আসবে না এবং যাতে হিন্দু সমাজের যথা সম্ভব কম ক্ষতি হয়, সেকথাও তিনি ভববেন। প্রসঙ্গত, তৎকালীন সময়ে সাভারকার বলেছিলেন বর্ণপ্রথা  সেকেলে হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে এই প্রথার কোনও প্রাসঙ্গিকতা নেই। কিন্তু গান্ধিজী বর্ণপ্রথার কট্টর সমর্থক ছিলেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরেও বাবাসাহেব হিন্দু সমাজের কাছ থেকে কোনও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া না পেয়ে অবশেষে ১৯৫৬ সালে ভারতের মাটিতে জন্ম নেওয়া বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন।

তাঁর জীবদ্দশায় হিন্দু সমাজের মধ্যে তাঁর ঈপ্সিত সংস্কারের প্রতিফলন তিনি দেখে যেতে পান নি একথা সত্য। কিন্তু হিন্দু সমাজের মধ্যে জন্ম নেওয়া অস্পৃশ্যতা নামক ব্যাধিকে শেষ করার জন্য সামাজিক আন্দোলন কখনও থেমে যায় নি। হিন্দুদের সর্ববৃহৎ সামাজিক সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান শ্রদ্ধাস্পদ মোহন রাও ভাগবত স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন যে অস্পৃশ্যতা ধর্ম নয়, ঘোর অধর্ম। হিন্দু সমাজের সমস্যার সমাধান হিন্দুদেরই করতে হবে। হিন্দু বিরোধী, ধর্ম বিরোধী বাম-বামাতিদের কুম্ভীরাশ্রু দেখে এবং সামনে  রাখা বাবাসাহেবের ছবি দেখে এই বাম-বামাতিদের পাতা ফাঁদে কেউ যাতে পা না দেয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি সকলকে রাখতে হবে এবং বাবাসাহেব বামপন্থীদের কোন চোখে দেখতেন সেটাও সকলের কাছে তুলে ধরতে হবে।  

5 Comments

  1. This is quite a timely piece writing🖋 to counter the many narratives that left liberals are promoting & propagating about B.R Ambedkar.

  2. এটি একটি ছোট বই আকারে প্রকাশিত করে কর্মীদের মাঝে বিলি করার ব্যবস্থা করলে ভালো হয় অনেক তথ্য দেয়া আছে। যেটা সাধারণ মানুষকে জানানো দরকার। খুব ভালো লাগলো পড়ে ধন্যবাদ দাদা

  3. একদা পৃথিবীর মানচিত্র তে প্রায় 7 – 8 টি দেশ মার্কসীয় ধ্বজা ধারী ছিল.. কিন্তু এখন তা 2-3 এ দাঁড়িয়েছে ! মার্কস এর অতি বড় দুই সমালোচক যারা “structural Marxism ” এবং “western Marxism ” কে নুতন ভাবে উপস্থাপন করেন 20-th century তে, (ইউরোপে), এবং সাবেকি মার্কস বাদ কে প্রায় নাস্তানাবুদ করে, — যেখানে ” civil society” খুবই মূল্যবান ভূমিকা পালন করে, বর্তমান সময় এর প্রেক্ষিতে -আমাদের পশ্চিম বঙ্গে ও “civil society” – জাগরণ ঘটেছে, বলা প্রয়োজন এই সময় এর প্রেক্ষিতে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ লেখনী ধারা, যা আমাদের সমাজের ‘বর্ণ হিন্দু ‘ দের সামনে থেকে ‘কমিউনিস্ট ‘দের ঠুনকো – ভেক ধারী রূপ টাকে টেনে বের করে দেবে..🙏🙏 ধন্যবাদ দাদা 🙏

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *